English
রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪
...

টেলিসামাদের চিরবিদায়

কিংবদন্তি কৌতুক অভিনেতা টেলিসামাদ

ঢাকা, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০১৯, বিনোদন ডেস্কঃ ঢাকাইয়া সিনেমার অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং অন্যতম বর্ষীয়ান কিংবদন্তি কৌতুক অভিনেতা আব্দুস সামাদ চলে গেলেন না ফেরার দেশে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি র'জিউন)। আজ দুপুরে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ৭৪ বছর বয়সে মৃত্যু বরন করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হলে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) বিশেষ সেবাদান করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন যাবত ব্লাড ক্যানসার ও হৃদরোগ সহ বিবিধ বার্ধক্যজনিত অসুস্থ্যতায় ভুগছিলেন। 

২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে টেলিসামাদকে বাইপাস সার্জারি করা হলে তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করেন এবং দেশে ফিরে আসেন। কিন্ত দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি এই বর্ষীয়ান কৌতুক অভিনেতার। তাই দেশে ফেরার দুই-এক মাসের মধ্যেই তাঁকে দুইবার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আর্থিক অনুদানে গত বছর অক্টোবরে তাঁর বাঁ পায়ে অস্ত্রপচার করা হয়। 

আব্দুস সামাদ ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার নয়াগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বড়ভাই বিখ্যাত চারুশিল্পী আব্দুল হাইয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ভাইয়ের মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে ভর্তি হন। চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি অভিনয়ের প্রতি বিশেষ ঝোঁক তাঁকে চিত্রজগতে টেনে নিয়ে আসে।

১৯৭৩ সালে পরিচালক নজরুল ইসলামের ‘কার বউ’ ছবিতে অভিনয় করার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক... ঘটে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান মোস্তফা মামুন তার ডাক নাম দিয়েছিলেন টেলিসামাদ। টেলি সামাদ অভিনীত সর্বশেষ ছবি অনিমেষ আইচের ‘জিরো ডিগ্রি’ ২০১৫ সালে মুক্তি পায়। 

সত্তরের দশক থেকে সুদীর্ঘ কাল প্রায় ৬০০ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। দেশবরেণ্য চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেন পরিচালিত এবং ফারুক - ববিতা জুটি অভিনীত নয়ন মনি সিনেমা অন্যান্যদের পাশাপাশি টেলি সামাদকেও বিশেষ জনপ্রিয় করে তোলে। চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকের সাথে সাথে অভিনয় ছাড়াও তিনি চিত্র প্রযোজনা এবং সংগীত চর্চা করতেন।

অভিনয়ের পাশাপাশি ৫০টির মত ছবিতে  গান করেছেন তিনি। অভিনয় শিল্প ছাড়াও সঙ্গীত চর্চা, লেখালেখি, ও ছবি আঁকার প্রতি তাঁর ছিল বিশেষ আগ্রহ ছিল। বাংলাদেশের কিংবদন্তী চলচ্চিত্র পরিচালক মরহুম আমজাদ হোসেনের টিভি নাটকে তাঁর সরব উপস্থিতি আজও দর্শকদের স্মৃতিতে অম্লান।

টেলিসামাদ অভিনীত সিনেমার মধ্যে বড় বৌ, সুজন সখি, গোলাপী এখন ট্রেনে, অশিক্ষিত, তুফান, দিন যায় কথা থাকে, নয়নের আলো, আমেরিকান অভিনেতা জন নেপিয়ার এডামস অভিনীত বিখ্যাত ছবি - দি ফাদার, অভাগী, বাদশাহ, মতি মহল, লাইলী মজনু, মায়ের আঁচল, আলিফ লায়লা, মাটির ঘর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 

টেলিসামাদের দুইজন স্ত্রী নিগার সুলতানা ও রেখা সামাদ, দুই মেয়ে সোহেলা সামাদ, সায়মা সামাদ এবং ছেলে সুমন সামাদ ও দিগন্ত সামাদ। বড় ছেলে সুমন সামাদ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। 




মন্তব্য

মন্তব্য করুন